
কাঁঠালিয়া সংবাদদাতাঃ
দ্বিতীয় পর্ব চোখ রাখুন তৃতীয় পর্ব
ঝালকাঠি কাঠালিয়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বসির বিরুদ্ধে সরকারি কৃষি বরাদ্দের বিভিন্ন খাতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তিনি কৃষি বরাদ্দের বিভিন্ন উপকরণ যেমন কৃষি যন্ত্রপাতি, প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী এবং কৃষি সহায়ক অন্যান্য প্রকল্পের অর্থ নিজস্ব পকেটে। যোগসাজশে কৃষি খাতটি দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে, ফলে প্রকৃত কৃষকরা বরাদ্দের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
কাঁঠালিয়া উপজেলায় দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই কৃষি কর্মকর্তা জাহিদ ইসলাম বসির বিরুদ্ধে কৃষি বিভাগে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে অসৎ উপায়ে সুবিধা আদায় করতে শুরু করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি কৃষি যন্ত্রপাতি বরাদ্দ এনে তা প্রকৃত কৃষকদের না দিয়ে, নিজের পছন্দের লোকদের হাতে তুলে দিয়েছেন। এর বদলে তারা কৃষকদের থেকে টাকা নিয়ে এই যন্ত্রপাতি অ-কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করেছেন।
এছাড়া, কৃষি প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর নামে তার অফিসে অধিকাংশ সময় অ-কৃষকদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। এসব প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে সামান্য খাবার ও কিছু টাকা দিয়ে স্বাক্ষর নেওয়া হতো। কাগজে ব্যাচের সংখ্যা ঠিক রাখলেও প্রকৃত কৃষকরা এতে অংশ নিতে পারতেন না। বরং, ওই সব স্বাক্ষরের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করতেন তিনি।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ অনুযায়ী, কৃষি যন্ত্রপাতি, প্রশিক্ষণ এবং বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা তারা কখনও পাননি। বরং, একাধিক কৃষক অভিযোগ করেছেন যে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বসির তাদের পছন্দের লোকদেরকে সরকারি সুবিধা দিয়েছেন। এক কৃষক জানিয়েছেন, ‘আমরা কৃষক, কিন্তু আমাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা কেউ দেয় না। অথচ, অ-কৃষকরা এই সুবিধাগুলো পেয়ে যাচ্ছে।
ভর্তুকি, কৃষি উপকরণ ও প্রণোদনা সরবরাহে ব্যাপক দুর্নীতি করছেন। কৃষক নঈম হাওলাদার বলেন, ‘কৃষি অফিস এমনভাবে কাজ করে যে প্রকৃত কৃষকরা কখনও এই সুবিধা পায় না। যারা কৃষক নয়, তারা ঘুষ দিয়ে বরাদ্দ পেয়ে যায়, কিন্তু কৃষকদের এই সুবিধা দেওয়া হয় না।
ইউনিয়নের একাধিক কৃষক জানিয়েছে, কৃষি অফিসের মাধ্যমে কিছু অ-কৃষক কৃষি যন্ত্রপাতি, যেমন ট্রাক্টর, পাম্প মেশিন, সার মেশিন পেয়ে যান। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এসব কৃষি যন্ত্রপাতি আবার বিক্রি করে দেন।
একাধিক কৃষক জানান, তাদের এলাকায় যারা কৃষি কাজ করেন না, তারাও কৃষি সহায়তা পেয়ে যান। ইউনিয়নের জাহিদ হোসেন মিরাজ বলেন, এখানে এমন অনেক কৃষক আছে যারা কখনও মাঠে কাজ করেনি, তারা কৃষি উপকরণ পেয়েছে এবং পরে তা বিক্রি করে দিয়েছে। কিন্তু যারা আসল কৃষক, তারা কখনও এই সুবিধা পায়নি।
ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোঃ মামুন ইসলাম জানিয়েছেন, এর আগে নিউজ দেখেছি তদন্ত করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কাঁঠালিয়া কৃষি কর্মকর্তা ফাতিমা ইসলামকে মুঠোফোনে একাধিকবার কলদিলে রিসিভ করেনি।
এ সকল অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় কৃষকরা হতাশ। তারা দাবি করছেন, কৃষি খাতে দুর্নীতি বন্ধ না হলে আসল কৃষকরা কখনও তাদের প্রাপ্য সহায়তা পাবে না।