আব্দুস সালাম,নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর সিঙ্গেরগারী পশ্চিম পাঠানপাড়া গ্রামে প্রতিপক্ষের চলমান মামলার রায়ে সাজা হওয়ার আশঙ্কায় নিজের স্ত্রীকে গর্ভপাত করিয়ে (এবোশন) প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নবজাতক হত্যা ও নারী নির্যাতনের মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্ব শত্রুতার জেরে পাঠানপাড়া গ্রামের নাড্ডা মামুদের ছেলে লায়ন মিয়া নিজেকে আইনের ফাঁদ থেকে রক্ষায় কৌশলে নিজের তিন মাসের গর্ভবতী স্ত্রীর গর্ভপাত করিয়ে প্রতিপক্ষ মানিবর রহমান, আনিছুর রহমান, ইয়াকুব আলী, মোছাঃ একা বেগম ও মোঃ সাগর ইসলামের নামে নারী ও নবজাতক হত্যার মামলা দায়ের করেন।
গত ২৫ মার্চ লায়ন মিয়া বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ আমলী আদালতে মামলা নং পিঃ-৭০/২০২৫ দায়ের করেন। মামলার নোটিশ আসামিদের হাতে পৌঁছালে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাদীর স্ত্রী জুলেখা বেগম তামাক শুকানোর জন্য দেয়া তামাক তুলতে গেলে অভিযুক্তরা দলবদ্ধ হয়ে তাকে মারধর ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এতে রক্তক্ষরণ শুরু হলে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরে ভোররাতে গর্ভের নবজাতকটি নষ্ট হয় বলে অভিযোগ করেন বাদী।
তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জুলেখা বেগমের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি এবং তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রহিমুদ্দিন মুন্সি বলেন, “এদের ভিটামাটি নিয়ে আগে থেকে বিরোধ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি কোনো মারামারির ঘটনা ঘটছে বলে আমরা জানি না।”
গ্রামবাসী আফজাল হোসেন বলেন, “মানিবর রহমান শান্ত স্বভাবের মানুষ। বরং তাকেই বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে লায়ন মিয়া ও তার লোকজন।”
স্থানীয় আনোয়ারা বেগম আরও বলেন, “প্রায় দেড় বছর আগে মানিবর রহমানকে কূপোকাত করতে কাস্তে দিয়ে তার উড়ুতে চোট মারে এতে মানিবরের পুরুষাঙ্গের অর্ধেক কেটে দেয় লায়ন মিয়া গং। সেই মামলার রায় ঘোষণার সম্ভাবনা থাকায় এখন উল্টো সাজানো মামলা দিয়ে প্রতিশোধ নিতে চাইছে তারা।”
উল্লেখ্য, মানিবর রহমানের করা আগের মামলায় যেসব আসামির নাম রয়েছে, এবারের নবজাতক হত্যা মামলায় সেসব আসামিকেই সাক্ষী করা হয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে মামলার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।